Home সাহিত্য জেন কবি রাইওকানের ১০টি কবিতা

জেন কবি রাইওকানের ১০টি কবিতা

ইংরেজি  থেকে বাংলা অনুবাদ

সুপ্রভা জুঁই 
৩২৩ views

টাইগু রাইওকান ছিলেন জাপানিজ জেন বুদ্ধিস্ট। তাঁর অসামান্য কবি প্রতিভা এবং ক্যালিগ্রাফির জন্য তিনি সুপরিচিত। প্রকৃতির সাথে কথা বলায় তিনি ছিলেন ওস্তাদ। তাঁর হাইকুতেও প্রকৃতি ভর করে। একজন ধর্মগুরুর চাইতে নিজেকে একজন কবি হিসেবে পরিচয় দিতেই পছন্দ করতেন রাইওকান। তিনি বাচ্চাদের খুব ভালোবাসতেন। প্রায়শই বুদ্ধ মন্দিরের জন্য ভিক্ষা করতে গিয়ে বাচ্চাদের সাথে খেলতে খেলতে ভিক্ষার কথা ভুলে যেতেন রাইওকান।

b2 copy

জেন কবি রাইওকানকে ভেবে আঁকা কিছু ছবি

১.
সেই চোর ফেলে গেলো
ঐ চাঁদকে,
আমার এই জানালায়।

২.
আমার উত্তরাধিকার—
কি-ই বা থাকবে তা?
বসন্তে ফুল,
গ্রীষ্মে কোকিলের ডাক,
আর শরতের লাল রঙা
মেপল পাতাগুলো…

৩.

উচ্চাকাঙ্ক্ষী হতে আলসেমি লাগে
দুনিয়ার যা হওয়ার তা-ই হোক, আমি ভাবি না।
ঝুলিতে আছে দশ দিনের ভাত,
চুলার পাশে কাঠের ছোট্ট এক গাঁইট।
মোহ ও মুক্তি নিয়ে কেন এত কথা?
ছাদের ওপরে রাতের বৃষ্টির শব্দ শুনতে শুনতে
আরাম করে বসে আছি , পা দুটো মেলে দিয়ে।

৪.
তুমি কি আমায় ভুলে গেলে?
নাকি এখানে আসার পথ হারিয়েছ? আমি তোমার পথপানে চেয়ে রই
সব দিন, প্রতি দিন
কিন্তু তুমি আর এলে না

৫.
তোমাকে জাগতেই হবে
ধোঁয়াটে মেঘের সারি
পাহাড়চূড়া ঢেকেছে তাতে
না জাগলে পরে
কেমন করে তুমি
আলো দেখতে পাবে?

b1 copy

বুদ্ধ পূর্ণিমা

৬.
হ্যাঁ, আমি সত্যি পাগল!
বটবৃক্ষের মাঝে থাকি।
আমাকে মোহ নিয়ে বোলো না,
আমাকে বোধিলাভ নিয়েও বোলো না।
এই বুড়ো আপন মনে হাসতে চায়,
রুগ্ণ পা নিয়ে আমি জলের স্রোত পার করি,
এক সুন্দর বসন্তে, কাঁধে নিয়ে ঝোলা।
ব্যাস, এই আমার জীবন।
আমার কাছে এই পৃথিবীর কোনো পাওনা নেই।

৭.
এই পৃথিবী
মুছে যাচ্ছে
পাহাড়ে প্রতিধ্বনি
নিস্তব্ধ এবং
অসার

৮.
সবাই ভাত খায়,
কেউ জানেনা কেন।
এই প্রশ্ন করলে
লোকে হাসে।
তবু তারা হাসলে ভালো।
হাসি আমিও ভালোবাসি।
হাসা কেবলই হাসা, আমরা থামবো না।
এখন এবং এই মুহূর্তে হেসে হেসে আমরা মৈত্রেয়ীকে স্বাগত জানাবো।

৯.
ভ্রমণ, কেবলই ভ্রমণ
ধনভাণ্ডারে ঠাঁসা এক পাহাড়ে এসে পৌঁছেছি
জানলাম, এ আর কিছু নয়
আমার ক্ষনিকের আবাস

১০.
এই বাতাস আমাকে
যথেষ্ট পাতা দেয় যেন
আমি আগুন জ্বালাতে পারি

 

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ