টিকটকে নিষেধাজ্ঞা থেকে পিছু হটেছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ না নেওয়া পর্যন্ত টিকটক নিষিদ্ধের আইনটি পেছানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করেছেন তিনি। আইনের ভাষায় ট্রাম্পের এই অনুরোধকে অ্যামিকাস ব্রিফিং বলা হয়। আদালতের বিবেচনাধীন কোনো বিষয়ে মামলার বাদী বা বিবাদী নন এমন কোনো ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে আদালতকে কোনো তথ্য বা অভিজ্ঞ পরামর্শ দিলে তাকে বলে অ্যামিকাস ব্রিফিং।
অ্যামিকাস ব্রিফিংয়ে ট্রাম্পের আইনজীবী ডি জন সাওয়ার লিখেছেন, পরবর্তী প্রেসিডেন্ট “রাজনৈতিক উপায়ে” এ সংকটের সমাধানের সুযোগ নিতে চান। সরকারের প্রকাশ করা জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগ মোকাবেলার পাশাপাশি প্ল্যাটফর্মটি বাঁচিয়ে রাখার জন্য আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একমাত্র প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পেরই চুক্তির দক্ষতা, নির্বাচনী আদেশ ও রাজনৈতিক ইচ্ছা রয়েছে।” – লিখেছেন সাওয়ার।
চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্সের অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধ বা বিক্রিতে বাধ্য করার আইনটি ট্রাম্পের নতুন মেয়াদ শুরুর ঠিক আগের দিন অর্থাৎ ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
তারিখটি ‘দুর্ভাগ্যজনক এক সময়’ বলে উল্লেখ করে ব্রিফিংয়ে যুক্তি দেওয়া হয়েছে নতুন প্রেসিডেন্টের টিকটকের সঙ্গে চুক্তিতে কাজ করার জন্য আরও সময় থাকা উচিত। এ নিষেধাজ্ঞা পেছানোর অনুরোধে টিকটকের আইনজীবীরাও একই ধরনের বিষয় উল্লেখ করেছিল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।
ব্রিফিংয়ে ট্রাম্পের চুক্তি করার অভিজ্ঞতা ও তার নিজের সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশালের বিষয়টিও উল্লেখ রয়েছে।
বর্তমানে টিকটক সম্পর্কের ট্রাম্পের অবস্থান তার প্রথম মেয়াদের নেওয়া পদক্ষেপ থেকে আলাদা। তিনি নিজেই ২০২০ সালে টিকটক নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। এমনকি, সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটের টিকটক কিনে নেওয়ার বিষয়েও তিনি রাজি ছিলেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে এনগ্যাজেট। ১০ জানুয়ারি টিকটক নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে যুক্তিতর্ক শুনানির কথা রয়েছে।
ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনী প্রচারণার সময় টিকটক নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মতামত বদলেছেন। “টিকটক নিষিদ্ধ করলে ফেইসবুক আরও বড় হয়ে উঠবে। ফেইসবুকসহ অন্যান্য কিছু সোশাল মিডিয়াকে আমি জনগণের শত্রু হিসেবে বিবেচনা করি।” – মার্চ মাসে সিএনবিসি’র স্কোয়াকবক্স অনুষ্ঠানে বলেছিলেন ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১৭ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারীর মধ্যে অনেকে আবার টিকটক থেকে মোটা অংকের অর্থ আয় করে জীবিকা নির্বাহ করেন। টিকটকে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তাদেরও আপত্তি রয়েছে। এসব কারণ বিবেচনা করেই ট্রাম্প নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অনেকের ধারণা।
তথ্যসূত্র: জিও নিউজ
