যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দর গতকাল শুক্রবার দিনভর বন্ধ থাকার পর স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় সীমিত আকারে উড়োজাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে।তবে আজ শনিবার থেকে আবারও বিমানবন্দরে পুরোদমে বিমান চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে কাছের একটি বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিমানবন্দরটি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজ চলাচলের সময়সূচি ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি, রয়টার্সসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে হিথ্রো বিমানবন্দরের কাছে অবস্থিত একটি বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়। এতে বিমানবন্দরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়ে। যার কারণে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে যাত্রীদের বিমানবন্দরে না আসার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে আনতে নিরলস কাজ করলেও যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
বিমানবন্দরের প্রধান নির্বাহী থমাস উল্ডবাই জানান, জরুরি ব্যাকআপ ব্যবস্থা কাজ করলেও তা পুরো বিমানবন্দর চালানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।
লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড জানিয়েছে, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটিতে আগুন লাগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৭০ জন কর্মীকে পাঠানো হয়। পরে সকাল ৮টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনের কারণে প্রায় ১ লাখ ঘরবাড়ি বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে বেলা ২টার দিকে বিমানবন্দরে আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়।
এরপর গতকাল বিকেলে হিথ্রো বিমানবন্দরের এক মুখপাত্র জানান, সন্ধ্যা থেকে বিমানবন্দরে সীমিত আকারে উড়োজাহাজ চলাচলের জন্য নিরাপদ ঘোষণা করা হবে। শনিবার থেকে পুরোদমে উড়োজাহাজ ওঠানামা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হিথ্রো বিমানবন্দরে বিদ্যুৎ সরবরাহ দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের জ্বালানিবিষয়ক মন্ত্রী এড মিলিব্যান্ড।
এদিকে ওই বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটিতে কীভাবে আগুন লেগেছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। আগুন লাগার পর উপকেন্দ্র এলাকার আকাশে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। উপকেন্দ্রটির আশপাশের ভবনগুলো থেকে প্রায় ১৫০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
লন্ডন পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, আগুন লাগার ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে আপাতত নাশকতার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, হিথ্রো বিশ্বের পঞ্চম ব্যস্ততম বিমানবন্দর। প্রায় ৮০টি দেশ থেকে এই বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল করে। প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার যাত্রী হিথ্রো দিয়ে যাতায়াত করেন। বছরে শেষে এই সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৮ লাখ ৩০ হাজারে।বিমানবন্দরটি বন্ধের কারণে গতকাল ১ হাজার ৩০০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল হওয়ার কথা ছিল। এতে ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েন যাত্রীরা।