পৃথিবীর সঙ্গে একটি গ্রহাণুর সংঘর্ষের সম্ভাবনা দিন দিন বেড়েই চলছে। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ সম্প্রতি ‘২০২৪ ওয়াইআরফোর’ নামের এই গ্রহাণুর ওপর নজরদারি শুরু করেছে। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ) জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দলকে এই গ্রহাণু পর্যবেক্ষণের জন্য জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
গ্রহাণুটির প্রকৃত আকার নির্ধারণ করা চ্যালেঞ্জিং কারণ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের প্রভাবের কারণে সঠিক পরিমাপ করা যায়নি। এটি আসলে ধারণার চেয়ে বড় হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রথম শনাক্ত হওয়া এই গ্রহাণুটির প্রস্থ প্রায় ১৮০ ফুট (৫০ মিটার) বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ধরনের একটি গ্রহাণু পৃথিবীতে আঘাত হানলে সম্পূর্ণ একটি শহর ধ্বংস করতে সক্ষম। ১৯০৮ সালে সাইবেরিয়ায় একই আকারের একটি গ্রহাণু প্রায় ৮ কোটি গাছ ধ্বংস করেছিল।
নাসার সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, ওয়াইআরফোর-এর পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষের সম্ভাবনা ১% থেকে বেড়ে ২.৩% হয়েছে। এই গ্রহাণুর পৃথিবীতে আঘাত হানার ঘটনাটি ঘটতে পারে ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর। বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এই সম্ভাবনা সম্পর্কে আরও সঠিক তথ্য পেতে কাজ করছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমানে ‘২০২৪ ওয়াইআরফোর’ পৃথিবী থেকে প্রায় ১,২৭,৬৯৯ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। তবে এই দূরত্ব ১.৪ মিলিয়ন কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। সম্ভাব্য সংঘর্ষের প্রভাব প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণ আমেরিকা, আটলান্টিক মহাসাগর, মধ্য আফ্রিকা এবং উত্তর ভারতের কিছু অংশে পড়তে পারে।
এই প্রসঙ্গে নাসার বিজ্ঞানী ডেভিড ফার্নোচিয়া বলেন, “যদিও সাম্প্রতিক গণনাগুলো সংঘর্ষের সম্ভাবনাকে দ্বিগুণ করেছে, আমরা ২০২৪ ওয়াইআরফোর-এর আরও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সম্ভাবনা আরও স্পষ্ট করে তুলব।”
বিজ্ঞানীরা এই গ্রহাণুর গতিপথ ও এর প্রভাব সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, যাতে সম্ভাব্য হুমকি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
সূত্র: ফোর্বস ও বিবিসি
