খাদ্য তালিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ডাল, যা প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে ভরপুর। অনেকেই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডাল রাখেন, আবার কেউ কেউ মনে করেন এটি প্রতিদিন খাওয়া ভালো নয়। তবে, আসলে কি রোজ ডাল খাওয়া ভালো? চলুন এ বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক-
ডালের পুষ্টিগুণ
ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে, যা শরীরের পেশী গঠনে সাহায্য করে। এ ছাড়াও এতে আয়রণ, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে ও হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায়।
প্রতিদিন ডাল খাওয়ার উপকারিতা
- নিরামিষভোজীদের জন্য ডাল প্রোটিনের অন্যতম উৎস। এটি শরীর গঠনের জন্য অপরিহার্য।
- এতে থাকা ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- কম ক্যালরি ও বেশি ফাইবার থাকার কারণে এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
ডালে থাকা ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করে, ছবি: প্ল্যানটুরা ম্যাগাজিন
- হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ডালের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ উপাদান রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
প্রতিদিন ডাল খাওয়ার অপকারিতা
যদিও ডাল খুবই পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্য সম্মত খাবার, তবে অতিরিক্ত ডাল খেলে কিছু সমস্যা হতে পারে। যেমন-
- অতিরিক্ত ডাল খেলে গ্যাস বা ফাঁপা ভাব হতে পারে।
- কিছু ডালে অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্ট থাকে, যা পুষ্টি শোষণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
কিডনি রোগীদের ডাল একটু কম খেলেও ক্ষতি নেই, ছবি: টু ব্রাদারস অর্গানিক ফার্মস
- যারা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য বেশি পরিমাণ প্রোটিন ক্ষতিকর হতে পারে।
- যাদের বাত বা গাউটের সমস্যা আছে তাদের কম ডাল খাওয়া উচিৎ। কারণ ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পিউরিন। এই উপাদান শরীরে প্রবেশ করে ইউরিক অ্যাসিডে পরিণত হয়। অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডই গাউট বা বাতের জন্য দায়ী।
ডাল খাওয়ার সহজ উপায়
- প্রতিদিন এক বাটি ডাল খাওয়া যেতে পারে, তবে পরিমাণটি নিজের শারীরিক অবস্থা ও খাদ্যাভ্যাস অনুযায়ী নির্ধারণ করা ভালো।
- বিভিন্ন ধরনের ডাল খাওয়া উচিত, যেমন-মুগ, মাসকলাই, মসুর, ছোলা, যাতে পুষ্টির বৈচিত্র্য বজায় থাকে।
- ভেজে বা বেশি তেলে রান্না করা ডাল এড়িয়ে চলা ভালো।
- গ্যাসের সমস্যা এড়াতে ডাল রান্নার আগে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখা উপকার।
প্রতিদিন ডাল খাওয়ার অভ্যাস স্বাস্থ্যকর, তবে তা পরিমিত পরিমাণে ও সঠিক পদ্ধতিতে গ্রহণ করা উচিত। এটি শরীরের পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই, সঠিক ডায়েট মেনে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ডাল খান ও সুস্থ থাকুন!
