Home খেলা ইমনের সেঞ্চুরির কল্যাণে হেসেখেলে জিতল বাংলাদেশ

ইমনের সেঞ্চুরির কল্যাণে হেসেখেলে জিতল বাংলাদেশ

১৬ views

১৯২ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যাটাররা দারুণ লড়াই করলেন। এক পর্যায়ে বাংলাদেশ দলের কপালে চিন্তার ভাঁজ ভালোভাবেই উঁকি দিচ্ছিল। সেই অস্বস্তি দূর করে দিলেন তিন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব ও হাসান মাহমুদ। পারভেজ হোসেন ইমনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর তাদের অবদানে জিতল টাইগাররা।

শনিবার (১৭ মে) শারজাহতে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে রানে ২৭ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৯১ রান তোলে তারা। জবাবে পুরো ওভার খেলে ১৬৪ রানে অলআউট হয়েছে স্বাগতিক আরব আমিরাত।

এ সংস্করণে বাংলাদেশের নতুন অধিনায়ক লিটন দাসের পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে যাত্রা শুরু হয়েছে জয় দিয়ে। ফলে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে সফরকারীরা। আগামী সোমবার (১৯ মে) একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দল দুটি। রান তাড়ায় ১৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৩১ রান তুলে ফেলেছিল আরব আমিরাত। শেষ ৪২ বলে জয়ের জন্য মাত্র ৬১ রান লাগত তাদের।

হাতে ছিল ৭ উইকেট। তবে এরপর অনুজ্জ্বলতা ঝেড়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান বাংলাদেশের বোলাররা, বিশেষ করে পেসাররা। ফলে বেশ ভালো ব্যবধানে জয় মিলেছে ফিল সিমন্সের শিষ্যদের। অধিনায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিম ওপেনিংয়ে নেমে সর্বোচ্চ ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন। ৩৯ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৭ চার ও ২ ছক্কা।

চারে নামা রাহুল চোপড়া ৫ চার ও ১ ছক্কায় ২২ বলে করেন ৩৫ রান। তৃতীয় উইকেটে তাদের জুটি ছিল ৪২ বলে ৬২ রানের। এরপর আসিফ খান যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, তখন ম্যাচে ছিল উত্তেজনা।

১৯তম ওভারে আসিফকে ফিরিয়ে দেন হাসান। পাঁচ নম্বরে নেমে ২১ বলে ৪২ রান আসে তার ব্যাট থেকে। শেখ মেহেদী হাসানকে টানা তিনটিসহ তিনি হাঁকান ৪ ছক্কা ও ৩ চার। আরব আমিরাতের শেষ ৫ উইকেট বাংলাদেশ তুলে নেয় মাত্র ১০ রানের মধ্যে।

বাংলাদেশের পক্ষে হাসান ৩৩ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট পান। আঁটসাঁট বোলিংয়ে মোস্তাফিজ ১৭ ও তানজিম ২২ রানে শিকার করেন দুটি করে উইকেট। খরুচে শেখ মেহেদী ২ উইকেট নেন ম্যাচের একদম শেষ ওভারে। বাকি উইকেট যায় তানভীর ইসলামের ঝুলিতে।

এর আগে ছক্কার মালা গেঁথে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি হাঁকান ইমন। এ বাঁহাতি ওপেনারের ব্যাটে চড়ে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ১৯১ রান করে দলটি।

শেষ ওভার পর্যন্ত ক্রিজে থাকা ইমন ৫৪ বলে ঠিক ১০০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন। তার ব্যাট থেকে আসে ৫ চার ও ৯ ছক্কা। ৮ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটিই তার প্রথম পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন তার। এই ম্যাচে মারমুখী ব্যাটিংয়ে ২৮ বলে ফিফটি পূরণের পর শতক ছুঁতে তাকে খেলতে হয় মাত্র ৫৩ বল।

পাশাপাশি এ সংস্করণে বাংলাদেশের জার্সিতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডও নিজের করে নিলেন ইমন। এ কীর্তি এতদিন ছিল রিশাদ হোসেনের দখলে। গত বছর সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩০ বলে ৫৩ রানের ইনিংসে ৭ ছক্কা মেরেছিলেন তিনি।

দুই রেকর্ড গড়ার পথে ভাগ্যের সহায়তাও পেয়েছেন ইমন। আরব আমিরাতের অভিষিক্ত পেসার মতিউল্লাহ খানের করা ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে লং-অফে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নো বল হওয়ায় বেঁচে যান তখন ৮৪ রানে থাকা এ ব্যাটার। আরেকটি সুযোগ পেয়ে এরপর কাজে লাগাতে কোনো ভুল করেননি তিনি।

সেঞ্চুরির পরপরই অবশ্য আউট হয়ে যান ইমন। ২০তম ওভারের প্রথম বলে তাকে বোল্ড করে দেন মুহাম্মদ জাওয়াদউল্লাহ। তিনি মূলত একাই টানেন বাংলাদেশ দলকে। ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান আসে অতিরিক্ত খাত থেকে।

বাংলাদেশের হয়ে আরো চারজন দুই অঙ্কে গেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তাওহিদ হৃদয় চারে নেমে ১৫ বলে করেন ২০ রান। তার সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ইমনের জুটি ছিল ৩২ বলে ৫৮ রানের। পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে অধিনায়কত্বের অভিষেকে রান পাননি ব্যাট হাতে ছন্দের অভাবে ভুগতে থাকা লিটন দাস। তিন নম্বরে নেমে ৮ বলে ১১ রান করে আউট হয়ে যান তিনি।

এই ইনিংসে সব মিলিয়ে মোট ১৩ ছক্কা মেরেছে বাংলাদেশ। এটি এই সংস্করণে দলটির সর্বোচ্চ। এর আগে দুবার কোনো ম্যাচে ১২টি করে ছক্কা হাঁকিয়েছিল তারা, ২০১৮ সালে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ও ২০২০ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

আরব আমিরাতের বাঁহাতি পেসার জাওয়াদউল্লাহ করেন দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং। ৪ ওভারের কোটা পূর্ণ করে মাত্র ২১ রান খরচায় ৪ উইকেট শিকার করেন তিনি। এ ছাড়া ধ্রুব পরাশর, মুহাম্মদ জুহাইব ও মতিউল্লাহ একটি করে উইকেট নেন।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ