Home সর্বশেষ খেলাপি ঋণ বেড়ে রেকর্ড ২,৮৪,৯৭৭ কোটি টাকা

খেলাপি ঋণ বেড়ে রেকর্ড ২,৮৪,৯৭৭ কোটি টাকা

ইকবাল হোসেন
৭৪ views
বাংলাদেশ ব্যাংক

অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে তিন লাখ কোটি টাকা ছুঁইছুঁই করছে। তিন মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। ছয় মাসে বেড়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। আর নয় মাসে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এ নিয়ে আর্থিক খাতে মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকায়।

হিসাবে আসা সময় পর্যন্ত বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮২১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে মোট ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ খেলাপি হয়ে আছে। গত ১৬ বছরের মধ্যে বিতরণ করা ঋণ ও খেলাপি ঋণের আনুপাতিক হিসাবে এটি সর্বোচ্চ পরিমাণের ঋণ খেলাপি হওয়ার ঘটনা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, গত বছরের জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে ব্যাংকগুলোর প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এতদিন যা স্বার্থান্বেষী মহলগুলোর কারসাজিতে চাপা পড়েছিল।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক তথা সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে। তারা ধারণা করছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলো ভুয়া দলিল ও অনিয়মের মাধ্যমে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। সেগুলো এখন বেরিয়ে আসবে।

জানা গেছে, শুধু এস আলম ও তার সহযোগীরাই ছয়টি ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব ঋণ মন্দ ঋণে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে অনেকে ঋণ পরিশোধ করতে চান না। তাদের এই প্রবণতা মন্দ ঋণের বোঝা আরও বাড়াতে পারে। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা অধিকাংশ ঋণ অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। ফলে এসব ঋণ আদায় করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান হয়। সেদিন গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা। তার পদত্যাগের পর থেকে ব্যাংক খাতের প্রকৃত তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ