Home টপ পোস্ট ‘এআই’ প্রস্তুতিতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশের চেয়ে পিছিয়ে

‘এআই’ প্রস্তুতিতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশের চেয়ে পিছিয়ে

ইকবাল হোসেন
৯৩ views
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিশ্ব অর্থনীতিকে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন করতে প্রস্তুত। শ্রমবাজার থেকে ডিজিটাল অবকাঠামো ও  সরবরাহ শৃঙ্খল— সব কিছুতে বিপ্লব ঘটাবে এআই। কিন্তু এআই কাজে লাগানোর প্রস্তুতিতে আফ্রিকার অনেক দেশের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশও বাংলাদেশ  থেকে এগিয়ে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সম্প্রতি প্রকাশিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রস্তুতি সূচকে এমন চিত্র উঠে এসেছে। ডিজিটাল অবকাঠামো, মানবপুঁজি ও শ্রমবাজার নীতি, উদ্ভাবন ও অর্থনৈতিক একীকরণ, নিয়ন্ত্রণ ও নীতি— এই চারটি ভিত্তির ওপর ১৭৪টি দেশের সূচকটি তৈরি করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, বিশ্বব্যাংক, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামসহ আটটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য নিয়ে সূচকটি তৈরি করেছে আইএমএফ।

সূচকে ১৭৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৩তম। এতে  বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে ভারত (৭২তম), ভুটান (৯০তম), শ্রীলঙ্কা (৯২তম), ভিয়েতনাম (৭৮তম), ইন্দোনেশিয়াসহ (৬১তম) প্রতিবেশী ও প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক দেশ। আবার কেনিয়া (৮৮তম), রুয়ান্ডা (৯১তম), ঘানা (১০০ তম), সেনেগালের (১০৯তম) মতো আফ্রিকার দেশগুলোও এই সূচকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।

এআইয়ের প্রস্তুতির সূচকে শীর্ষে রয়েছে সিঙ্গাপুর। তালিকায় শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে বাকিগুলো হচ্ছে— ডেনমার্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জার্মানি ও সুইডেন। সিঙ্গাপুর এআই সক্ষমতা বাড়ানো এবং জাতীয় এআই কৌশলগুলোকে বাস্তবায়নে শতশত মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। লিংকডইন অনুসারে, সিঙ্গাপুরের কর্মীরা এআই দক্ষতা গ্রহণে বিশ্বের দ্রুততম।

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ জাতীয় এআই নীতিমালা গ্রহণ করেছে। যেমন- ফিনল্যান্ড ২০১৭ সালে এআই  নীতিমালা গ্রহণ করে।  যার লক্ষ্য ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা এবং ডেটা দক্ষতা বাড়ানো।

সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর অবস্থান পাকিস্তান (১২২তম),  নেপাল (১৩০তম), মালদ্বীপ (১৪১তম) ও  আফগানিস্তান (১৭৩তম)।

আইএমএফ বলছে, এআই উৎপাদনশীলতা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আয় বাড়াতে পারে। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে। তবে এটা বৈষম্যও বাড়াতে পারে, কাজও হারাতে পারেন অনেকে।

আইএমএফের গবেষণা অনুযায়ী, এআই উন্নত অর্থনীতির দেশের ৩৩ শতাংশ, উদীয়মান অর্থনীতির দেশের ২৪ শতাংশ ও নিম্ন আয়ের দেশে ১৮ শতাংশ চাকরিকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে৷ অন্যদিকে এআই বিদ্যমান চাকরির উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যাপক সম্ভাবনা নিয়ে আসছে৷

বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে এআই এর ব্যবহার বাড়ছে৷ বিশেষ করে টেলিযোগাযোগ খাত, মোবাইল ব্যাংকিং, মার্কেটিং৷ কৃষি খাতেও এর ব্যবহার শুরু হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ  এখনো এআই প্রযুক্তির জন্য প্রস্তুত নই। প্রযুক্তির তৃতীয় যুগে যেতে হলে আমাদের দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী লাগবে। যারা তৈরি হচ্ছে, তাদের আমরা ধরে রাখতে পারছি না, তারা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাদের ধরে রাখার ব্যবস্থা যেমন করতে হবে, তেমনি এআই আমাদের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষায় যুক্ত করতে হবে।

ভারতে এআই নিয়ে অনেক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানকে সরকার নানাভাবে সহায়তা করছে। কিন্তু আমাদের এখানে হচ্ছে না৷ তরুণ গবেষকদের ফান্ড দিতে হবে।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, এআইর জন্য যে মানবসম্পদ দরকার, সেদিকে বাংলাদেশের  তেমন উদ্যোগ নেই। ওয়েবসাইটের ডিজাইন তৈরির দক্ষতা আর এআই এর দক্ষতা এক নয়৷ আমাদের টেকনোলজি তৈরি করতে হবে৷ সেই দক্ষতা লাগবে।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ