Home বিনোদন নতুন বাংলাদেশ কি চায়, র‍্যাপ না কাওয়ালী?

নতুন বাংলাদেশ কি চায়, র‍্যাপ না কাওয়ালী?

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩৩ views

জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন সবার চোখেমুখে। দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধও বলছেন অনেকে। আমরা জানি মুক্তিযুদ্ধে গান কীভাবে সবার মনোবল অটুট রেখেছিল। এবারেও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে এবারের প্রকাশ ঘটেছে র‍্যপ সংগীতে। আর আন্দোলন পরবর্তীকালে সাড়া ফেলেছে কাওয়ালী।  

ফুটবলকে যেমন ধনী-গরীব সবার খেলা বলা হয়, তেমনি র‍্যাপকেও সবার সংগীত বলা হয়। ফুটবল খেলতে শুধু বল প্রয়োজন, তেমনি র‍্যাপে দরকার কেবলই ‘বিট’ বা ছন্দ। সেই ছন্দে কথাগুলো বসিয়ে র‍্যাপ সংগীত উপস্থাপন করা হয়। ছন্দাকারে বলার জন্য র‍্যাপকে সংগীতের একটি মাধ্যম ভাবা হলেও র‍্যপ মূলত ডুবে আছে এর কথায়। গানে সুর প্রধান, কবিতায় কথা। কিন্তু র‍্যপ কথাকে প্রধান করে ছন্দে ছন্দে সহজ ভাষায় মানুষের মনে গেঁথে দিতে পারে। শিল্পের একটি সূক্ষ্ম মাধ্যম তাই র‍্যাপ। কথাপ্রধান হওয়ার কারণে র‍্যপ মানুষ মনে রাখবে এবং গাইবে এমনটা বিশেষ দেখা যায়না। এমনকি আন্দোলন পরবর্তীকালে এই র‌্যাপ গেয়ে সবাই উদযাপন করছে এটাও দেখা যায়নি। 

আন্দোলন চলাকালীন শহীদ মিনার অভিমুখে লং মার্চ কর্মসূচিতে ড্রোন শটে আমরা শুনি ‘ধন্যধান্যে পুষ্পে ভরা’ এই গানটি। গানটি জেন-জি দের নয়, নয় মিলেনিয়ামদেরও। কালজয়ী গানটি সর্বস্তরের মানুষের আবেগকে স্পর্শ করলেও ঐ সময়ে র‍্যাপ সংগীতকে কি করে টপকে এগিয়ে এলো সেই প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই করছেন। কারণ প্রতিবাদী র‍্যাপ গানের জন্য র‍্যাপার হান্নান ততক্ষণে স্বৈরাচারের জুলুমের শিকার হয়ে হাজতবাসী হয়েছেন। ফলে র‍্যাপ সংগীত অন্য যেকোনো গানের চাইতে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক হওয়ার কথা ছিল।

d35c729a 4820 4da1 b705 ff01e0cf8800 1
ছবি: ফ্রিপিক

নতুন বাংলাদেশ সহিংসতা চায় না। নিজেদের পরিচিতি তৈরীর স্বার্থে। তাই ইসলামের সুফিভাবকে সামনে এনে অনেকেই কাওয়ালী গানের আয়োজন করেন। এই আয়োজনকে উৎসাহিত করা হলেও কেন র‍্যাপ সংগীত আমাদের মুখে মুখে ঘুরছে না এবং কেন বলিউডের গানগুলো কাওয়ালী আসরে বেশি জনপ্রিয় এনিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কাওয়ালী পরিবেশনের মাধ্যমে একভাবে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতাকে স্তিমিত করা হয় বলে সিরিজ মাজার ভাঙার এই সংকটকালে আয়োজনটিকে অনেকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে কাওয়ালী আয়োজনে পর্দা দিয়ে ঢেকে মেয়েদের বসার জায়গা আলাদা করার প্রসঙ্গটি সবার চোখে লেগেছে। একারণে কাওয়ালী শিল্পীরা কতখানি সুফিভাবকে ধারণ করছেন সেই প্রশ্নও উঠে আসছে।  

র‍্যাপ সংগীতেরই একমাত্র কোনো নেতিবাচক সমালোচনা নেই। র‍্যাপারদের যতটা উৎসাহিত করা হয়েছে ততটাই দ্রুত তারা মলিন হয়ে গেলো। আন্দোলন চলাকালীন ‘আওয়াজ উডা’ শিরোনামে র‍্যাপটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল। এবং তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় বাংলাদেশের অসামাঞ্জস্যতাকে ইঙ্গিত করে ‘আওয়াজ উঠান লাগবো’ শিরোনামে তাদের একটি নতুন র‍্যাপ প্রকাশ পেয়েছে। স্বৈরাচার তাড়ানোতেই শেষ নয়, সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য তারা এখনো আওয়াজ উঠিয়ে যাচ্ছেন।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ