৪৬
এসিড- নামটা শুনলেই মনে হতে পারে ক্ষতিকর, ভয়ংকর রাসায়নিক উপাদান! কিন্তু এমন একটি ‘এসিড’ আছে যা একেবারে উল্টো। একে বলে গ্লাইকোলিক এসিড। এই একটিমাত্র উপাদানই আপনার মুখত্বক, শরীরত্বক, এমনকি চুলের নানা জটিল সমস্যা সমাধানে ম্যাজিকের মতো কাজ করতে পারে। এই জাদুকরী ক্ষমতার জন্য গ্লাইকোলিক এসিড অল্প সময়ে সৌন্দর্যপ্রেমীদের হৃদয় জয় করে ট্রেন্ডি উপাদানের তকমা লুফে নিয়েছে।
গ্লাইকোলিক এসিড কী?
গ্লাইকোলিক অ্যাসিড হল আলফা হাইড্রক্সি এসিড (AHA) শ্রেণির একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা সাধারণত আখের রস থেকে তৈরি হয়। এর অণুর গঠন খুবই ক্ষুদ্র, ফলে এটি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে এবং ভেতর থেকে কাজ করে।
গ্লাইকোলিক এসিডের যত জাদু
- ত্বকে জমে থাকা মৃত কোষের স্তর অপসারণে গ্লাইকোলিক এসিড অপরিহার্য। এটি এক্সফোলিয়েটর হিসেবে কাজ করে, ফলে ত্বক হয় অনেক বেশি উজ্জ্বল ও কোমল।
- নিয়মিত ব্যবহারে গ্লাইকোলিক এসিড ত্বকের কালো দাগ, ব্রণের দাগ ও মেছতা হালকা করে। এটি ত্বকের টোনকে সমান করতে সাহায্য করে।
- ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে, ফলে ফাইন লাইন, রিঙ্কেলস কমে আসে। বয়সের ছাপ কমিয়ে ত্বক দেয় তরতাজা অনুভূতি।
- যারা চুলে খুশকি বা স্ক্যাল্পে চুলকানিতে ভোগেন, তাদের জন্য গ্লাইকোলিক এসিড স্ক্যাল্প এক্সফোলিয়েটর হিসেবে দারুণ কাজ করে।
- এটি স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে, ফলে নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। স্ক্যাল্পের শুষ্কতা ও অস্বস্তি দূর হয়।
- পিঠ, বুক বা বাহুতে যাদের ব্রণ হয়, তাদের জন্য গ্লাইকোলিক অ্যাসিড যুক্ত বডি ওয়াশ বা লোশন অত্যন্ত কার্যকর। এটি রুক্ষতা দূর করে ত্বক করে মসৃণ।
- কনুই, হাঁটু বা আন্ডারআর্মের মতো জায়গায় জমে থাকা ময়লা ও ডার্কনেস দূর করতে এটি দারুণ কার্যকর। দীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হয় ফর্সা ও দাগহীন।
- ঘামের দুর্গন্ধ আসলে ঘাম থেকে নয়, বরং ঘামে থাকা প্রোটিন যখন ত্বকের ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মিশে ভেঙে যায়, তখনই গন্ধ তৈরি হয়। গ্লাইকোলিক এসিড ত্বকের উপর জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং তাদের পুনরুৎপাদন বন্ধ করে দেয়।
- পায়ের গোড়ালি ও পায়ের তলায় সাধারণত অনেক মৃত কোষ জমে থাকে, যা ফাটার মূল কারণ। গ্লাইকোলিক অ্যাসিড একটি শক্তিশালী এক্সফোলিয়েটর, যা মৃত কোষ ভেঙে তুলে দেয় এবং ত্বককে নরম করে। গ্লাইকোলিক অ্যাসিড কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে, ফলে পা ফাটা জায়গা ধীরে ধীরে মেরামত হয়। এটি নতুন, কোমল ত্বক গঠনে সহায়তা করে।
ব্যবহারে কিছু সতর্কতা
- গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ব্যবহারের পর সানস্ক্রিন ব্যবহার করা আবশ্যক, কারণ ত্বক সূর্যের প্রতি বেশি সংবেদনশীল হয়ে পড়ে।
- শুরুর দিকে সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করাই ভালো।
- সংবেদনশীল ত্বকে আগে প্যাচ টেস্ট করে নিন।
- রাতের বেলা ব্যবহার করাই উত্তম।
- শেভিং-এর ঠিক পর ব্যবহার করবেন না। এতে জ্বালা বা র্যাশ হতে পারে।