Home বাণিজ্য মোবাইল ইন্টারনেটে কম মেয়াদের ডেটা প্যাকেজ ফিরছে

মোবাইল ইন্টারনেটে কম মেয়াদের ডেটা প্যাকেজ ফিরছে

ইকবাল হোসেন
৯১ views

মোবাইল ইন্টারনেট সেবায় ফিরল ছোট মেয়াদের বিভিন্ন ডেটা প্যাকেজ; এক বছর আগে যেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল ইন্টারনেটে প্যাকেজ সংখ্যার সীমা তুলে নিয়েছে । গ্রাহক এখন ঘণ্টা হিসেবেও প্যাকেজ কিনতে পারবেন। পাশাপাশি গ্রাহককেন্দ্রিক বিভিন্ন মেয়াদের প্যাকেজও দিতে পারবে অপারেটররা।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কয়েক ঘণ্টার প্যাকেজও  বিক্রি করতে পারবে অপারেটরগুলো।

‘আনলিমিটেড ভলিউমের’ ক্ষেত্রে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেবে অপারেটরগুলো। তবে রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কোনো ঘণ্টা বা মিনিটভিত্তিক মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজ তৈরি করা যাবে না।

এবার প্যাকেজ সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়নি। আগের নির্দেশিকায় বলা ছিল, রেগুলার প্যাকেজ, বিশেষ প্যাকেজ (সিসিএসপি), রিসার্চ ও ডেভেলমেন্টসহ (আরঅ্যান্ডডি) সব মিলিয়ে (ফ্লেক্সিবল প্ল্যান অনুযায়ী) প্যাকেজ হবে ৪০টি, যা আগে ছিল ৮৫টি।

রোববার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ‘মোবাইলফোন অপারেটরসমূহের ডেটা ও ডেটাসংশ্লিষ্ট প্যাকেজ সম্পর্কিত নির্দেশিকা-২০২৪’ প্রকাশ করেছে; যাতে ছোট মেয়াদের এসব প্যাকেজ আবার চালু করা যাবে বলে সিদ্ধান্তের তথ্য তুলে ধরা হয়।

বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই এসব ডেটা প্যাকেজের গ্রাহকচাহিদা বেশি থাকার কথা বলে তা আবার চালুর দাবি করে আসছিল মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। নতুন নির্দেশিকাকে স্বাগত জানিয়েছে শীর্ষস্থানীয় মোবাইল অপারেটরগুলো।

নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, ‘রেগুলার’ প্যাকেজের মেয়াদ ৩০ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন করা হয়েছে। আর মেয়াদ শেষের আগে নতুন প্যাকেজ কিনলে বা ‘অটো রিনিউ’ হলে গ্রাহকরা আগের প্যাকেজের অব্যবহৃত ডেটা নতুন প্যাকেজের সঙ্গে (ক্যারি ফরোয়ার্ড) বুঝে পাবেন।

গ্রাহকদের প্রতিমাসে তাদের রিচার্জ এবং ব্যবহারের হিসাব জানিয়ে বাংলায় বার্তা (এসএমএস) পাঠাবে অপারেটরগুলো। একই তথ্য তারা পাঠাতে পারবে ই-মেইল, অ্যাপ, ওয়েবসাইট, ইউএসএসডির মত বিকল্প মাধ্যমেও।

মোট তিন ধরনের প্যাকেজের কথা বলা হয়েছে এবারের নির্দেশিকায়। এর মধ্যে রেগুলার প্যাকেজের ন্যূনতম মেয়াদ হবে সাত দিন।

গ্রাহককেন্দ্রিক বিশেষ প্যাকেজের (সিসিএসপি) ন্যূনতম মেয়াদ তিন দিন এবং রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্যাকেজের ন্যূনতম মেয়াদ করতে হবে সাত দিন।

এছাড়া গ্রাহকরা যেন বেছে নিতে পারেন, সেজন্য প্রতিটি অপারেটর ‘ফ্লেক্সিবল প্ল্যান’ হিসেবে একটি প্যাকেজ করবে বলে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে।

গ্রাহকের স্বার্থ এবং আর্থ সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় অপারেটরদের প্যাকেজ নির্ধারণের স্বাধীনতা এই নির্দেশিকায় দেওয়া হয়েছে। তবে ঘণ্টাভিত্তিক ও এক থেকে তিন দিনের প্যাকেজের সর্বোচ্চ ডেটা ভলিউম বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

প্রতি ঘণ্টায় ২০০ এমবি, একদিনের প্যাকেজে তিন জিবি, দুই দিনের প্যাকেজে পাঁচ জিবি ও তিন দিনের প্যাকেজে সর্বোচ্চ আট জিবি পর্যন্ত বিক্রি করতে পারবে মোবাইল অপারেটররা।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, একটি প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই একজন গ্রাহক যদি একই প্যাকেজ কেনেন বা ‘অটো রিনিউ’ হয়, তাহলে আগের প্যাকেজের অব্যবহৃত ডেটা ‘ক্যারি ফরোয়ার্ড’ করতে হবে।

সেখানে বলা হয়, অপারেটররা তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রাহককে বোনাস দিতে পারবে। বোনাস ডেটা আগে খরচ হবে। আর বোনাস অব্যবহৃত থাকলে মেয়াদের মধ্যে একই প্যাকেজের অথবা অপারেটর প্রস্তাবিত প্যাকেজ কিনলে অব্যবহৃত বোনাসসহ মোট অব্যবহৃত ডেটা ক্যারি ফরোয়ার্ড করতে হবে। আর যেকোনো প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন আগে গ্রাহককে এসএমএস-এর মাধ্যমে ‘নোটিফিকেশন’ পাঠাতে হবে।

একজন গ্রাহককে অপারেটর প্রতিদিন সর্বোচ্চ তিনটি প্রমোশনাল (প্যাকেজসহ) এসএমএস পাঠাতে পারবে। এগুলো পেতে না চাইলে গ্রাহক যেন ডু নট ডিস্টার্ব (ডিএনডি) সেবা নিতে পারেন, সে বিষয়ে অপারেটররা ব্যপক প্রচার চালাবে।

পাশাপাশি প্রতিমাসে গ্রাহককে অন্তত দুবার ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ সার্ভিসের বিষয়ে এসএমএস পাঠাতে হবে। অপারেটরদের মধ্যে ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ সার্ভিসের ডেটাবেইজ শেয়ার করতে হবে।

গ্রাহক অভিজ্ঞতা, মোবাইল ডাটা পেনিট্রেশন এবং ডিজিটাল সার্ভিসের ব্যবহার উদ্বুদ্ধ করতে মোবাইল অপারেটরগুলো প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ২০০ এমবি ডেটা বিনামূল্যে দেওয়ারে বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।

বিটিআরসির এমন সিদ্ধান্তে খুশি মোবাইল অপারটেরগুলো। তারা এই নির্দেশিকা স্বাগত জানিয়েছে। এটা গ্রাহকদের নতুন নতুন উদ্ভাবনী সেবা সরবরাহে সুযোগ তৈরি করবে।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ