অ্যান্টার্কটিকায় শিকাগোর আকারের একটি বিশাল আইসবার্গ ভেঙে পড়ার ফলে সমুদ্রের এমন একটি অংশ উন্মোচিত হয়েছে যেখানে সূর্যের এল পৌঁছায়নি প্রায় এক শতাব্দী। বিজ্ঞানীরা সেখানে একটি সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় জীববৈচিত্র্যের সন্ধান পেয়েছেন যা তাদেরকে বিস্মিত করেছে।
জানুয়ারি ২০২৫-এ, জর্জ-ষষ্ঠ আইস শেলফ থেকে প্রায় ১৯ মাইল দীর্ঘ একটি আইসবার্গ বিচ্ছিন্ন হয়, যা সমুদ্রের একটি নতুন অংশ উন্মোচিত করে। গবেষণা জাহাজ ফ্যালকোর (টু) এর বিজ্ঞানীরা নতুনভাবে উন্মোচিত সমুদ্রতলে অনুসন্ধান চালিয়ে সেখানে অক্টোপাস, আইসফিশ, বিশাল সমুদ্র মাকড়সা, প্রবাল এবং স্পঞ্জের মতো জীবের উপস্থিতি লক্ষ্য করেন।

জর্জ ষষ্ঠ বরফের তাক দ্বারা সম্প্রতি আচ্ছাদিত সমুদ্রতলের একটি অঞ্চলে প্রায় ৩৮০ মিটার গভীরে একটি একক হাইড্রোয়েড স্রোতে ভেসে বেড়াচ্ছে, ছবি: নিউজ নেশন নাও
দলের প্রধান বিজ্ঞানী ড.প্যাট্রিসিয়া এসকুয়েট বলেন, ‘আমরা এত সুন্দর এবং সমৃদ্ধ ইকোসিস্টেমের সন্ধান পাব বলে আশা করিনি। এই প্রাণীগুলোর আকার দেখে মনে হয়, তারা কয়েক দশক, হয়তো শতাব্দী ধরে সেখানে বসবাস করছে।’
এই আবিষ্কারটি বিজ্ঞানীদের জন্য একটি রহস্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতদিন বরফের নিচে সূর্যের আলো না পৌঁছানোর পরও কীভাবে এই জীবগুলো বেঁচে ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সমুদ্র স্রোত পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে থাকতে পারে, যা এই ইকোসিস্টেমকে টিকিয়ে রেখেছে। তবে এই বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।

অ্যান্টার্কটিকার বেলিংশাউসেন সাগরে সমুদ্রতলের উপর রাজা কাঁকড়া, ছবি: নিউজ নেশন নাও
এই ধরনের ঘটনা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে নতুন ধারণা প্রদান করে। অ্যান্টার্কটিকায় বরফের শেলফগুলোর ভেঙে পড়া এবং নতুন ইকোসিস্টেমের উন্মোচন আমাদের গ্রহের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই ধরনের গবেষণা ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে আরও গভীর ধারণা দিতে সহায়তা করবে।
সূত্র: ডেইলি হেরাল্ড ও ফক্স নিউজ