Home বাণিজ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় বেড়েছে ১০৩ শতাংশ

যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় বেড়েছে ১০৩ শতাংশ

ইকবাল হোসেন
৩৪ views

দেশের অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে এ মুহূর্তে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। রেমিট্যান্সের এই উল্লম্ফনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছেন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী প্রবাসীরা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির এই দেশটি থেকে জুলাই-মার্চ সময়ে ৩৯৪ কোটি ৬১ লাখ (৩.৯৪ বিলিয়ন) ডলার এসেছে, যা মোট রেমিট্যান্সের ১৮ দশমিক ১১ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা এই রেমিট্যান্সের গত অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। শতাংশ হিসাবে বেড়েছে ১০৩ শতাংশের বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের জুলাই-মার্চ সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৯৪ কোটি ৩১ লাখ (১.৯৪ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ পরিসংখ্যানে এসব তথ্যে উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) ২ হাজার ১৭৮ কোটি ৪৪ লাখ (২১.৭৮ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা, যা গত অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি।

চলতি অর্থ বছরের জুলাই-মার্চ সময়ের ৩.৯৪ বিলিয়ন ডলারের মধ্য দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে পেছনে ফেলে রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষ দেশের তালিকায় উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। অথচ মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের চেয়ে অনেক কম বাংলাদেশি অবস্থান করেন আমেরিকায়।

চলতি অর্থ বছরের জুলাই-মার্চ সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ৩ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। সৌদি আরবের প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার।

অন্য দেশগুলোর মধ্যে এই নয় মাসে যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে ২ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার। মালয়েশিয়ার প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার।

গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের জুলাই-মার্চ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ১ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন। আরব আমিরাত থেকে এসেছিল ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। সৌদি আরব থেকে এসেছিল ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার।

যুক্তরাজ্য থেকে এসেছিল ২ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। মালয়েশিয়ার প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার।

হিসাব বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জুলাই-মার্চ সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিটেন্স বেড়েছে ১০২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। তবে গত অর্থ বছরে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছিল যে দেশ থেকে, সেই আরব আমিরাত থেকে এই নয় মাসে কমেছে ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ। সৌদি আরব থেকে অবশ্য ৪০ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়েছে। মালয়েশিয়া থেকে আরও বেশি বেড়েছে, ৫৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। যুক্তরাজ্য থেকে বেড়েছে ১ শতাংশ।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রথমত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিও এক ধরনের চাপের মধ্যে পড়েছিল; মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। দেশটির মানুষের পাশাপাশি সেখানে অবস্থানকারী বাংলাদেশিদেরও খরচ বেড়েছিল।

তিনি বলেন, সে কারণে সেখানকার প্রবাসীরা দেশে পরিবার-পরিজনের কাছে কম টাকা পাঠিয়েছিলেন। এখন যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি কমে স্বাভাবিক হয়েছে; ২ শতাংশে নেমেছে। অর্থনীতিও চাঙা হচ্ছে। তাই এখন আমাদের প্রবাসীরা বেশি টাকা দেশে পাঠাচ্ছেন।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ