চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে শুরুটা নড়বড়ে ছিল নিউজিল্যান্ডের। তবে উইল ইয়োং ও টম লাথামের জোড়া সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ পেয়েছে কিউইরা। এই দুই ব্যাটারের সেঞ্চুরিতে ভর করে পাকিস্তানকে ৩২১ রানের টার্গেট দিয়েছে কিউইরা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বড় স্কোরের নিচে চাপা পড়ে পাকিস্তান আর বের হতে পারেনি। বাবর আজম আর খুশদিল শাহের হাফ সেঞ্চুরি সত্ত্বেও থেমে যেতে হলো ৪৭.২ ওভারে ২৬০ রানে।
তাতে স্বাগতিক পাকিস্তানকে ৬০ রানে হারিয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শুভ সূচনা করেছে নিউজিল্যান্ড। চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের শুরুটাই হয়েছে বাজে। ওপেনিংয়ে আজ বাবর আজম থাকলেও ছিলেন ফখর জামান। বাবরের সঙ্গে ছিলেন সৌদ শাকিল। এ ওপেনিং জুটিতে স্বাগতিকরা পেয়েছে কেবল ৮ রান। চতুর্থ ওভারেই উইলিয়াম ওরুর্কের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন শাকিল।
এরপর ক্রিজে বাবরের সঙ্গী হন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে অধিনায়কও দলের হাল ধরতে ব্যর্থ হন। দলীয় ২২ রানেই বিদায় নেন রিজওয়ান। রিজওয়ানকে ফেরাতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন গ্লেন ফিলিপ্স। দুর্দান্ত এক ক্যাচে মুঠোবন্দী হয়ে ব্যক্তিগত ৩ রানেই ফিরতে হয় পাকিস্তানের অধিনায়ককে।
এদিকে রিজওয়ানের পর ক্রিজে বাবরের সঙ্গী হন ফখর। বাবর-ফখর জুটি মনোযোগ দিয়েছিল ইনিংস গড়ার দিকে। দুজনের জুটি দলকে চাপমুক্ত করার পাশাপাশি রানও বাড়িয়ে নিচ্ছিল। তবে দুজনের জুটি ৫০ রানের হওয়ার আগেই ফিরতে হয় ফখরকে। ফিলিপ্সের বলে ক্যাচ তুলে জীবন পেলেও মাইকেল ব্রেসওয়েলের বলে বোল্ড হয়ে ৪১ বলে ২৪ রানেই বিদায় নেন ফখর।
ফখর আউট হওয়ার পর একে একে অন্য সতীর্থরাও আসা-যাওয়ার মিছিলে থাকলে পরাজয় অনেকটাই নিশ্চিত হতে থাকে।
বাবর অবশ্য একপ্রান্ত আগলে রেখে তিন ম্যাচ পর ফিফটি তুলে নেন। তবে তা খুবই ধীরগতির। ১ ছক্কা ও ৬ চারে ৯০ বলে খেলেন ৬৪ রানের ইনিংস।
ওরুকির বলে বাবর আউট হলে বড় ব্যবধানের পরাজয় দেখার শঙ্কায় ছিল টুর্নামেন্টের মূল আয়োজকদের। শেষে অবশ্য দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা খুশদিল শাহ ব্যবধান কিছুটা কমান। ১০ চার ও ১ ছক্কায় ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন এই অলরাউন্ডার। তাতে সব উইকেট হারিয়ে ২৬০ রান করতে পারে পাকিস্তান।
এর আগে বল করতে নেমে ম্যান ইন গ্রিনদের বোলাররাও খেলেছেন দুর্দান্ত। আঁটসাঁট বোলিংয়ে ব্ল্যাকক্যাপসদের সংগ্রহ বাড়াতে দেননি। তবে উইল ইয়াংয়ের পর সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন টম ল্যাথাম। এ দুজনের জোড়া সেঞ্চুরির সুবাদেই শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩২০ রানের সংগ্রহ গড়েছে সফরকারীরা।
আগে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার মিলে শুরুটা ভালোই করেছিলেন। তবে দলীয় ৩৯ রানেই ফিরতে হয় ডেভন কনওয়ীকে। কিউই এই ওপেনার ১৭ বলে ১০ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন আবরার আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে। এর পরের ওভারেই আউট হন কেইন উইলিয়ামসন। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে কিউইরা। এরপর ড্যারিল মিচেলও দলের হাল ধরতে ব্যর্থ হন।
২৪ বলে ১০ রান করে মিচেল আউট হন হারিস রউফের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে। এদিকে মিচেল ফেরার পর ক্রিজে আরেক ওপেনার ইয়াংয়ের সঙ্গী হন টম ল্যাথাম। এ দুজন মিলেই দলের বড় সংগ্রহের ভিত্তি গড়ে দেন। দুজন মিলে গড়েছিলেন ১১৮ রানের বড় জুটি। এ জুটি গড়ার পথে শতকের দেখা পেয়েছেন ইয়াং।
১০৭ বলে সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া ইয়াং শেষ পর্যন্ত সাজঘরে ফিরেছেন ১১৩ বলে ১০৭ রান করে। এদিকে ইয়াং ফিরলেও আরেক ব্যাটার লাথাম ছিলেন ক্রিজে। ইয়াং ফেরার পর সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। তার সঙ্গে দুর্দান্ত ব্যাট করেছেন গ্লেন ফিলিপ্সও।
পঞ্চম উইকেটে এ দুজন মিলে গড়েছিলেন রানের দুর্দান্ত ১২৫ রানের অপরাজিত জুটি। ল্যাথাম শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১১৫ রানে। ফিলিপ্স অপরাজিত ছিলেন ৬১ রানে। এ দুজনের দুর্দান্ত ইনিংসের সুবাদেই ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩২০ রানের সংগ্রহ পায় কিউইরা।