ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান এবং দেশটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। স্টারমার জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও অন্যান্য দেশ মিলে একটি ‘সম্মতদের জোট’ গঠন করা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে এই সমর্থনে অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করা হবে।
ইউরোপের ১৮টি দেশের নেতাদের এক শীর্ষ সম্মেলনের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমরা ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি।’ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, ইউক্রেন ‘শক্তিশালী সমর্থন’ অনুভব করছে এবং এই সম্মেলন ইউরোপের ‘অভূতপূর্ব সংহতি’ প্রকাশ করছে।
এ সম্মেলনের ঠিক দুই দিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে হোয়াইট হাউসে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।
স্টারমারের চার দফা পরিকল্পনাগুলো- ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ আরও বৃদ্ধি, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কোনো শান্তি আলোচনা না করা এবং ইউক্রেনকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা, ভবিষ্যতে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করা এবং একটি ‘সম্মতদের জোট’ গঠন করে ইউক্রেনে একটি টেকসই শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও রক্ষা করা।
স্টারমার ইউক্রেনের জন্য ১.৬ বিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার) মূল্যের অতিরিক্ত রপ্তানি ঋণ ঘোষণা করেছেন, যা পাঁচ হাজারের বেশি আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য ব্যয় হবে। এর আগে, ইউক্রেনকে ২.২ বিলিয়ন পাউন্ড সামরিক সহায়তা দেওয়ার জন্য রাশিয়ার বাজেয়াপ্ত সম্পদের মুনাফা ব্যবহার করে একটি ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
স্টারমার বলেন, ‘আমরা অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে চাই। এমন কোনো দুর্বল চুক্তি গ্রহণ করা যাবে না, যা রাশিয়া সহজেই লঙ্ঘন করতে পারে। চুক্তিকে শক্তিশালীভাবে রক্ষা করতেই হবে’। তিনি ‘বুটস অন দ্য গ্রাউন্ড, প্লেনস ইন দ্য এয়ার’ উল্লেখ করে বলেন, যুক্তরাজ্য এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরাসরি ভূমিকা নেবে।
সম্মেলনের পর জেলেনস্কি যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে স্যান্ড্রিংহামে সাক্ষাৎ করেন। পরে সাংবাদিকদের জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ সম্পদ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত। সম্মেলনে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেন, সুইডেন, তুরস্ক, কানাডাসহ ১৮টি দেশের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: বিবিসি