Home সর্বশেষ আসছে নতুন মহাকাশযান, ৩০ মিনিটেই দিল্লি থেকে নিউইয়র্ক!

আসছে নতুন মহাকাশযান, ৩০ মিনিটেই দিল্লি থেকে নিউইয়র্ক!

মোহাম্মদ রবিউল্লাহ
৯৬ views

এক সময় আমেরিকা বললে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষদের কাছে অন্য গ্রহের মতো মনে হতো। সেই সময় অনেক আগেই পেরিয়ে গেছে। বর্তমানে ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যেতে সময় লাগে ২০ ঘণ্টা। তবে সরাসরি ফ্লাইট না থাকলে সময় আরও কয়েক ঘণ্টা বেশি লাগে। সব মিলিয়ে একদিনের মতো সময় লাগে ভারত থেকে আমেরিকা যেতে।

তবে একদিনের পরিবর্তে যদি মাত্র আধা ঘণ্টায় দিল্লি থেকে নিউইয়র্কে যাওয়া যায়, তাহলে বিষয়টা কেমন হবে? শুনতে সায়েন্সফিকশনের মতো মনে হলেও এটি বাস্তব হতে যাচ্ছে।

দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন নীতির ফলেই এমন প্রায় অসম্ভব ব্যাপারটি সম্ভব হতে যাচ্ছে। কীভাবে ভারত থেকে আমেরিকা মাত্র ৩০ মিনিটে পৌঁছানো যাবে? সেই মহাকাশযান বা উড়োজাহাজের গতিবেগই কেমন হবে? এমন নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে।

দিল্লি থেকে নিউইয়র্কের দূরত্ব প্রায় ১২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার। দীর্ঘ এই পথ মাত্র ৩০ মিনিটে অতিক্রম করতে হলে বিমানের গতি হতে হবে ঘণ্টায় ২৫ হাজার কিলোমিটার। এ পর্যন্ত যে যুদ্ধবিমানের গতি সর্বোচ্চ তা ঘণ্টায় মাত্র ৪ হাজার মাইল বেগে ছুটে চলে। তাহলে কীভাবে মাত্র ৩০ মিনিটে দিল্লি থেকে নিউইয়র্কে যাওয়া যাবে— এমন প্রশ্ন উঠেছে অনেকের মনে।

 

৩০ মিনিট

হংকং-সিঙ্গাপুর, লস অ্যাঞ্জেলস-টরন্টো, ব্যাংকক-দুবাই অতিক্রম করা যাবে এক ঘণ্টারও কম সময়ে, ছবি: জি নিউজ

 

 

এর উত্তর হচ্ছে— বিমান নয়, স্পেস এক্সের মহাকাশযানে চড়ে মাত্র ৩০ মিনিটে ভারত থেকে আমেরিকায় পাড়ি দিতে পারবেন যাত্রীরা। শুধু ভারত থেকে আমেরিকায় নয়, হংকং থেকে সিঙ্গাপুর, লস অ্যাঞ্জেলস থেকে টরন্টো, ব্যাংকক থেকে দুবাই— সব দূরত্ব অতিক্রম করা যাবে এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে।

লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে টরন্টো পৌঁছানো যাবে ২৪ মিনিটে, লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক ২৯ মিনিটে, আর নিউইয়র্ক থেকে সাংহাই ৩৯ মিনিটে পৌঁছানো যাবে বলে জানিয়েছেন স্পেস এক্সের কর্ণধার ও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। সম্প্রতি মাইক্রোব্লগিং সাইট ‘এক্স’-এ ইলন মাস্ক এক ভিডিওতে জোর গলায় বলেন, এটা অসম্ভব নয়, শিগগিরই এটি হতে পারে।

শোনা যাচ্ছে, ট্রাম্পের ক্যাবিনেটে ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্মেন্ট এফিশিয়েন্সির দায়িত্ব পাচ্ছেন মাস্ক। এরইমধ্যে ‘আর্থ-টু-আর্থ স্পেস ট্রাভেল’ (Earth-to-Earth space travel) নামে একটি প্রজেক্ট ঘোষণা করেছেন ইলন মাস্ক, যা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। এই প্রজেক্টে একটি স্টারশিপ রকেট বা মহাকাশযানের পরিকল্পনা করেছেন মাস্ক, যাতে একসঙ্গে এক হাজার যাত্রী চড়তে পারবে। এই প্রযুক্তি সাব-অরবিটাল মহাকাশযান ব্যবহার করবে, যা অভাবনীয় গতিতে দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম।

জানা গেছে, দশ বছর আগেই স্টারশিপ রকেটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল মার্কিন কেবিনেটে। তবে নানান কারণে তা বাস্তবে রূপ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন কিভাবে সম্ভব হবে— এমন প্রশ্নও করছেন কেউ কেউ।

এক্সের একটি প্রচারমূলক ভিডিও শেয়ার করার পর স্টারশিপ রকেটের ধারণাটি সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এরপর ধারণা করা হচ্ছে, ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে উদ্যোগটিকে দ্রুত অনুমোদন দেবে।

ইলন মাস্কের এই ‘আল্ট্রা ফাস্ট ট্রাভেল’ পরিকল্পনা বিশ্বের যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। স্পেসএক্স ওয়েবসাইট অনুসারে, ক্রু এবং কার্গো উভয়কেই পৃথিবীর কক্ষপথ, চাঁদ, মঙ্গলসহ এর বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য ডিজাইন করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, জি নিউজ ও হিন্দুস্তান টাইমস

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ